চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে ইন্ডিয়া মেটেরলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের (আইএমডি) তরফে এপ্রিল থেকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার ব্যাপারে আপডেট দেওয়া হয়েছে। আইএমডি যে আবহাওয়া মডেলের ওপর নির্ভর করে, সেটির সর্বশেষ বিশ্লেষণ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে এল নিনোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার প্রায় নিশ্চিত একটা সম্ভাবনা আছে। গত ১০ বছরের মধ্যে এই নিয়ে ছয়টি এরকম নজির দেখা যাবে। মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উষ্ণায়নের ফলে এটি ঘটে। এটির জেরে বিশেষকরে জুলাই এবং আগস্টের মধ্যে ভারতের পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য অঞ্চলের পশ্চিমাংশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাবে। এল নিনোর সম্ভাবনা থাকলেও আইএমডি একটি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে, এরকম দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করেছে। ৮৭ সেমির ৫০ বছরের দীর্ঘ সময়ের গড়ের ৯৬%। তবে ৯৬%-এর কম হলে সেটাকে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলে শ্রেণীবদ্ধ করতে হবে। এই মূল্যায়নের মধ্যে আরও একটি বিষয় ধরা পড়েছে, সেটি হলো ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোল (আইওডি)। এটি এমন একটি পরিস্থিতি, যেখানে ভারত মহাসাগরের পশ্চিমাংশ এবং পূর্বাংশের মধ্যে তাপমাত্র ওঠানামা করে। এটির জেরে বৃষ্টিপাতের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং এল নিনো থেকে বর্ষার ঘাটতি থেকে এর আগমন ঘটে। এটা মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এল নিনোর কারণে যতটা বৃষ্টি কমে যায়, আইওডির ফলে ঠিক ততটা শক্তিশালী বর্ষার সম্ভাবনা থাকে না। ১৯৯৭ সালে ভারতে জোরালো এল নিনো হয়েছিল। তবুও ইতিবাচক আইওডির কারণে সেবার ২% অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়। তবে সেই বছরের পর থেকে, এই দুটো ঘটনার নজির আর একসাথে দেখা যায়নি। তারপর থেকে এই প্রথমবার একই বর্ষার মরসুমে উভয় ফ্যাক্টরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বৃষ্টিপাতে ১০%-এরও বেশি ঘাটতি হয়েছিল। ওই দুটো বছরেই এল নিনো দেখা গিয়েছিল।
আইএমডির আপডেট থেকে আরও জানা গিয়েছে যে, দেশে বৃষ্টিপাতে পুষ্ট কৃষিজ এলাকার পরিমাণের গড় হবে ৯২%-১০৪%-এর মধ্যে। টেকনিক্যালি এর মানে ‘স্বাভাবিক’, তবে এটা একটা বিশাল ভেরিয়েশন এবং এর মানে অবিরাম বৃষ্টিপাতের পর দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিহীনতা দেখা দিতে পারে। আঞ্চলভেদে বৃষ্টিপাতের যে প্রকারভেদ আছে, তা পূরণ হতে পারে। তবে সেটা কৃষিকাজের জন্য সহায়ক হবে না। প্রতিটি বর্ষার মরসুমে, কিছু না কিছু উল্লেখ করার মতো বিষয় থাকে। এবার স্থানিকভাবে এবং অস্থায়ীভাবে, উভয় ক্ষেত্রে বর্ষা কোথায় কতটা হয়, তাতে নজর রাখতে হবে। বিশেষকরে ভারতের মধ্যাঞ্চলে জুলাই এবং আগস্টে বৃষ্টির তীব্র ঘাটতির কারণে কৃষি উৎপাদনে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই মাসে বৃষ্টি সংক্রান্ত আরও নির্ভুল মূল্যায়ন আইএমডির বর্ধিত রেঞ্জ ফোরকাস্টের মাধ্যমে পাওয়া যাবে, যা পাক্ষিক পূর্বাভাস প্রদান করবে এবং এগুলো ডায়নামিক হতে পারে। ৪ জুন কেরলে বর্ষা ঢোকার কথা আছ। সেই তারিখেই বৃষ্টি পৌঁছাবে না তার থেকে একটু আগে বা দেরিতে আসবে, সেটির সাথে বর্ষাকালের মূল মাসগুলোতে বর্ষার পরিমাণের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। এই বছর কৃষকদেরকে বৃষ্টি সংক্রান্ত নির্ভুল, সময়োচিত তথ্য প্রদান করার জন্য রাজ্যগুলো এবং কেন্দ্রকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে, ব্লক স্তর থেকে শুরু করে, সমস্ত উপলভ্য তথ্যের চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে।
COMMents
SHARE