জেনারেটিভ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানে হলো এমন ধরনের এআই, যেটি নতুন ডেটা তৈরি করতে পারে। আজ বিশ্বে নানা প্রকারের জেনারেটিভ এআইয়ের উদাহরণ রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণত ইউজারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে টেক্সট, ইমেজ এবং কোড তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। এমনকি এর বাইরেও এআই অন্য কাজ করতে সক্ষম। নানা ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার থেকে সেটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়। এতে উল্লাসের পাশাপাশি উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। ওপেন এআইয়ের চ্যাট জিপিটি চ্যাটবটটি নিজের বুদ্ধিমত্তা খুব ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারে। আজকাল ব্যাপকভাবে জেনারেটিভ এআইয়ের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। নিউরাল নেটওয়ার্ক সমর্থিত এআই মডেলগুলোকে বিগত কয়েক বছরে বিশাল পরিমাণ ডেটাসেট এবং পর্যাপ্ত কম্পিউটিং শক্তি অ্যাক্সেস করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর সুফল পাওয়া গিয়েছে। নতুন অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যালয়ের অনুসন্ধান, সুচারু বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক অ্যাক্টিভিটির জন্য এটিকে কাজে লাগানো হয়েছে। অনেক সাধারণ কাজেও এটি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে যেটা সবচেয়ে বেশি নজরে পড়েছে, সেটা হলো ডেটাতে ভুল থাকলে তা শনাক্ত করার দক্ষতা। কোন ডেটা থেকে বাস্তবের পরিস্থিতি ফুটে ওঠে বা প্রকৃত সত্য জানা যায় এবং এআই ব্যবহার করে, যে ডেটাকে অনুপযুক্তভাবে তুলে ধরা হয়, তার মধ্যে পার্থক্য করার কাজটা সহজ নয়। এটি এবং অন্যান্য কিছু কারণের জন্য এক উল্লেখযোগ্য এআই বিশেষজ্ঞ সংক্ষিপ্তভাবে বলেছিলেন, “মহামারি এবং পরমাণু যুদ্ধের মতো অন্যান্য সামাজিক ঝুঁকি সহ এআই থেকে অবলুপ্তিকরণের বিপদ হ্রাস করার ওপর আন্তর্জাতিক স্তরে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।” যারা খারাপ উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহার করছেন, তারাও অন্যতম ঝুঁকি। তবে মানব সমাজের জটিলতার প্রেক্ষিতে বলতে হয়, বিষয়টা এতটাও সহজ নয়। এর বাইরেও আরও অনেক কিছু রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে যে বিশেষ কিছু উদ্বেগের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো গুরুত্ব সহকার আলোচনা করা প্রয়োজন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এআই মডেলগুলোর অভ্যন্তরীণ কার্যপ্রণালী, সেগুলোতে কপিরাইট যুক্ত ডেটা বা তথ্যের ব্যবহার, মানুষের মর্যাদা এবং গোপনীয়তাকে সম্মান করা এবং তথ্যকে মিথ্যা হিসাবে তুলে ধরা থেকে সুরক্ষা প্রদান। আজকাল যে মডেলগুলো তৈরি করা হচ্ছে, সেগুলোতে এই বিষয়গুলো বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত বা আওতাভুক্ত করা হচ্ছে না। তবে এই বিষয়গুলোর মধ্যে যে ঝুঁকি জড়িয়ে রয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এআই মডেলগুলো পরিচালনা করার জন্য কম্পিউটেশনাল রিসোর্সের প্রয়োজন রয়েছে। তবে কনজ্যুমার ইলেক্ট্রনিক্সে থাকা একই উপাদানের সাথে এক্ষেত্রে বিরোধ দেখা যায়। তাই বিপজ্জনক সংস্থাগুলোর কাজকর্মে লাগাম পরাতে গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর জন্য দরজা খোলা রাখার নীতি অবলম্বন করা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ওপেন-সোর্স এআই ঝুঁকির প্রোফাইল চালু করতে এবং বজায় রাখতে, যে সব আই মডেলগুলোতে ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি সেগুলোর পরীক্ষা করার জন্য স্যান্ডবক্স করা আর অ্যান্ড ডি পরিবেশ সেট আপ করতে, ব্যাখ্যা করা যায় এমন এআই তৈরি করার প্রচার করতে, হস্তক্ষেপ করতে হবে এমন পরিস্থিতি সংজ্ঞাবদ্ধ করতে ও সতর্কতামূলক দৃষ্টি বজায় রাখতে ভারত সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। নিষ্ক্রিয়তার কোনো জায়গা নেই। উদাসীন মনোভাব গ্রহণ করলে শুধু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই নয়, সেই সাথে এআইয়ের যে সুফল রয়েছে, ভারত তা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
COMMents
SHARE