বারাণসীতে জ্ঞানব্যাপী মসজিদে হিন্দু দেবতার আরাধনা করার জন্য পাঁচ মহিলার দাখিল করা একটি স্যুটকে মান্যতা দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত সম্ভবত এটির স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন করার একটি সুচারু চেষ্টার ওপর বৈধতা আরোপ করেছে। একই বিষয়ে একটি জেলা আদালতের নির্দেশ বহাল রেখে বিচারপতি জে. জে. মুনির বলেছেন, হিন্দু দেবতার আরাধনা করার জন্য এটিতে আবেদনকারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার সীমিত সুযোগ রয়েছে এবং এটি মসজিদকে মন্দিরে রূপান্তর করার প্রচেষ্টাও নয়। তাই তার ব্যাখ্যা, এই মামলাটি প্লেস অব ওয়ারশিপ (স্পেশাল প্রভিশন) অ্যাক্ট, ১৯৯১ দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হবে না। এই আইন অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের হিসাব অনুযায়ী আরাধনাস্থলগুলোর স্ট্যাটাসের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। এই মামলায় ১৯৯১ সালের আইনটি, উত্তরপ্রদেশ ওয়াকফ অ্যাক্ট ১৯৯৫ এবং ইউ.পি শ্রী কাশী বিশ্বনাথ টেম্পল অ্যাক্ট ১৯৮৩-এর বাধা রয়েছে বলে বারাণসীর অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদের পরিচালন কমিটির তরফ থেকে যে আপত্তি করা হয়েছিল, আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে। হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর অনেক মুসলিম আরাধনাস্থল তৈরি করা হয়েছে বলে অনেক সময় দাবি করা হয়। এই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে, এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয় যে জ্ঞানব্যাপী মসজিদের ওপর ভবিষ্যতের একটি সম্ভাব্য দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগ একটি আইনি উপায় অবলম্বন করার রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে।
তবে আদালত এই বিষয়টি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে যে, কোনো সিভিল স্যুটকে শুরুতেই খারিজ করে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবাদীর পেশ করা দাবিগুলোকে সীমিত করে দেওয়া দরকার। বিবাদীর দাবি, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের আগে এবং পরে মসজিদের আশেপাশে হিন্দু দেবতার পূজা করা হতো। বিশেষ করে দাবি করা হয়েছে যে, ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জ্ঞানব্যাপীতে হিন্দু দেবতার আরাধনা করা হতো। তারপর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের বিরুদ্ধে আন্দলন তুঙ্গে উঠলে এই আরাধনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালের পর এটি কমিয়ে প্রত্যেক বছরে এক দিন করা হয়। এই মামলাটি শুধুমাত্র আরাধনা করার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বা এর পিছনে বড় কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, তা একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। মসজিদের স্ট্যাটাস পরিবর্তন করার একটি চেষ্টা হিসাবে এই মামলাকে বিবেচনা করতে রাজি নয় আদালত। তবে এটা উল্লেখ করার মতো বিষয় যে, মসজিদটি ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর তৈরি করা হয়েছিল কি না, সেটাও দেখতে হবে বলে বিবাদীর তরফে বলা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, পরিকাঠামোটি যদি ভেঙে ফেলা হয়, তবুও এটিতে থাকা দেবতাকে সরানো যাবে না। রীতি অনুযায়ী আরাধনা করার যে অধিকার রয়েছে, সেটির ফলে যদি মসজিদের স্ট্যাটাসে ধীরে ধীরে বা আমূল পরিবর্তন ঘটে, সেটা সত্যিই একটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হবে।
COMMents
SHARE