সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ এখন অতীত। রোহিত শর্মার দল এখন টেস্ট জয়ের দিকে নজর দেওয়ার জন্য একত্রিত হয়েছে। টি-২০ টুর্নামেন্টটি হতে উত্তেজনাময় মুহূর্ত দেখা গিয়েছে। তবে পাঁচদিন ধরে অনুষ্ঠিত হওয়া টেস্ট ক্রিকেটে একজন খেলোয়াড় এবং সম্মিলতভাবে দল, উভয়ের দক্ষতাকে চরম পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। বুধবার থেকে লন্ডনের ওভালে শুরু হচ্ছে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (ডব্লুটিসি) ফাইনাল। ভারত এই ম্যাচটি জিততে পারলে, তার থেকে বড় পুরস্কার বোধহয় আর কিছু হতে পারে না। লন্ডনের যে অংশে বৃহৎ সংখ্যক এশিয়ান, আফ্রিকান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বসবাস করেন, সেখানে ভারতের সমর্থনের অভাব হবে না। এটি অ্যাওয়ে গেম হলেও রোহিত শর্মার দল মনে করতে পারে, তারা নিজেদের ঘরের মাঠে খেলছে। স্টেডিয়ামে ভারতীয় টিমের হয়ে অনেকে গলা ফাটাবেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া সাম্প্রতিক এনকাউন্টারগুলোতে ভারত ভালো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের মাটিতে হোক বা ডাউন আন্ডারে, উভয় জায়গাতেই টিম ইন্ডিয়া শেষ হাসি হেসেছে। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের একটা বাড়তি চাপ রয়েছে। সমকক্ষ দুটি টিম নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠবে। ইংল্যান্ডে ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে নিয়েছিল ভারত। সেটাই হলো ভারতের শেষ কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টে জয়। তাই এই দীর্ঘ বিরতির পর ভারত ফের একবার আইসিসি টুর্নামেন্টে জয় পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাবে।
এর আগে, ২০২১ সালে সাউদ্যাম্পটনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। সেবারও সেরার সেরা লড়াইয়ে উঠেছিল ভারত। প্রতিপক্ষ ছিল কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড। যদিও ভারত সেই ম্যাচে পরাজিত হয়। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা, অজিঙ্কে রাহানে, আর. অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজা - এই প্রবীণ খেলোয়াড়রা আইসিসি টুর্নামেন্টে জয়ের স্বাদ পেতে চেষ্টা কোনো ত্রুটি রাখবেন না। চোটের কারণে জসপ্রীত বুমরাহ এবং ঋষভ পন্তকে পাবে না ভারত। তবে শুভমান গিলকে নিয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার স্পিডস্টারদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটিং বরাবরই ঝলসে ওঠে। সেই পুনরাবৃত্তির আশাতেও রয়েছে ভারতীয় শিবির। এবার ভারতীয় দলেরও পেস বোলিং আক্রমণও বেশ শক্তিশালী। অশ্বিন এবং জাডেজা উভয় স্পিনারকে, না কি কোনো একজন স্পিনারকে প্রথম একাদশে রাখা হয়, সেটা একটা দেখার বিষয় হতে চলেছে। সিডনির এসসিজির মতো ওভালের সার্ফেসেও উপমহাদেশের ফ্লেভার পাওয়া যাবে। তবে ইংল্যান্ডের খামখেয়ালী আবহাওয়া এবং পিচে থাকা অল্প ঘাস দুই দলের লড়াইয়ে অন্য মাত্রা যোগ করবে। বিপক্ষ শিবিরের অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে রয়েছে একটি শক্তিশালী পেস অ্যাটাক। মিচেল স্টার্কের মাধ্যমে বাঁহাতি আক্রমণের বৈচিত্রও পাবে অস্ট্রেলিয়া। এর পাশাপাশি ব্যাটিং লাইনআপও বেশ মজবুত। স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার এবং মার্নাস লাবুশেনরা অন্যতম শক্তিশালী ব্যাটসম্যান। ডব্লুটিসি ফাইনালের পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাশেজে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। তাই এই ম্যাচে তারা নিজেদের দক্ষতাকে ভালোভাবে ঝালিয়ে নিতে চায়। চূড়ান্ত চাপের মুহূর্তে কারা মাথা ঠাণ্ডা রেখে জয় নিশ্চিত করতে পারে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
COMMents
SHARE